টঙ্গী থেকে ” আশরাফুল শ্রাবণ
শৈশব থেকে অদম্য সংগীত সাধনা করে চ্যানেল আই সেরা কন্ঠের ফাইনাল রাউন্ডে মারজিত রহমান মহারাজা।
মারজিত রহমান মহারাজা ২৭ মার্চ ২০০২ সালে গাজীপুর জেলার টঙ্গী থানাধীন আউচপাড়া এলাকায় জন্মগ্রহণ করেন। শৈশব থেকে খুব দুরন্ত চঞ্চল প্রকৃতির বালক ছিলেন ২০০৬ সালে টঙ্গী পাইলট স্কুল এন্ড গার্লস কলেজে নার্সারিতে অধ্যায়ন শুরু করেন শৈশব থেকে এই বালক সংগীতের প্রতি খুব আগ্রহী ছিলেন মাত্র ৪ বছর বয়সে ২০০৬ সালে গাজীপুর জেলার অন্যতম সংগীত একাডেমি টঙ্গী মিউজিক স্কুলে ভর্তি হন, এ প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা মোঃ শাহ্ আলম সজল তার কাছে সঙ্গীতের হাতে খড়ি সা রে গা মা পা শুরু করেন। মহারাজার মা মাহফুজা বেগম তিনি ছিলেন স্কুল শিক্ষিকা তার অর্জিত বেতন এবং টিউশন ভাতার পুরো টাকা ছেলের সংগীতের পিছনে ব্যয় করতেন। চঞ্চল দুরন্ত বালক হলেও মহারাজা ছিলেন খুব মেধাবী ও প্রতিভাবান, অতি অল্প দিনে তিনি সংগীতের বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র যেমন, হারমোনিয়াম, তবলা, গিটার আয়ত্ত করেন। সংগীত গুরু হিসেবে মোঃ শাহ্ আলম সজল খুব মার্জিত ও বিচক্ষণ, তিনি মহারাজাকে লালন গীতি, নজরুল গীতি, রবীন্দ্র সংগীত এর পাশাপাশি দেশ বরেণ্য খ্যাতিমান শিল্পীদের গান শেখাতে থাকেন। ২০১৩ সালে মাত্র ১১ বছর বয়সে চ্যানেল আই ক্ষুদে গানরাজ সংগীত প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন সেখানে সেরা ১২ তে উত্তীর্ণ হন । সে বছর লালন সংগীতের উপর প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত থেকে জাতীয় পুরস্কার গোল্ডেন মেডেল গ্রহণ করেন। সে সময় মহারাজা কে টঙ্গী পাইলট স্কুল এন্ড গার্লস কলেজ এর উদ্যোগে সংবর্ধনা দেওয়া হয়, সে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে গাজীপুর ২ আসনের সংসদ সদস্য, আলহাজ্ব মোঃ জাহিদ আহসান রাসেল, মারজিত রহমান মহারাজা কে ইলেকট্রিক বাদ্যযন্ত্র গিটার উপহার প্রদান করেন। সে বছরই বাংলাদেশ শিশু একাডেমির পক্ষ থেকে জাপানের ফুপুওকায় শিশু সম্মেলনে অংশগ্রহণ করার জন্য জাপানে পারি জমান। ২০১৩ সালে মহারাজা বাউল শিল্পী শফি মন্ডল এর কাছে বাউল সংগীতের উপর তালিম নেন। ২০১৪ সালে ইসলামীক গান ও দেশাত্মবোধক গানের উপর জাতীয় পুরস্কার লাভ করেন। ২০১৫ সালে পুনরায় চ্যানেল আই ক্ষুদে গানরাজে অংশগ্রহণ করেন এবং ফাইনাল রাউন্ডে জায়গা করে নেন। মারজিত রহমান মহারাজা বিভিন্ন সময়-২০১৫,২০১৬,২০১৭ ও ২০১৮ সালে ক্রমান্বয়ে জাতীয় পুরস্কার লাভ করেন। ২০২৩ সালে তিনি চ্যানেল আই সেরা কন্ঠে অংশগ্রহণ করে ফাইনাল রাউন্ডে উত্তীর্ণ হন।
মারজিত রহমান মহারাজা সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় কালে তার বক্তব্যে তিনি বলেন তার আজকের এই অবস্থানে আসার পেছনে শৈশব থেকে তার মা এবং তার সংগীত গুরু মোঃ শাহ্ আলম সজল এর সহযোগিতা শিক্ষা ও মমতার অবদান কে স্মরণ করেন। তিনি আরো বলেন এই দুটি মানুষ তাকে প্রেরণা যোগিয়েছেন। আসন্ন চ্যানেল আই সেরা কন্ঠ চূড়ান্ত প্রতিযোগিতায় পারফর্ম এর জন্য তিনি আমেরিকায় যাবেন, আর সেখানে প্রথম স্থান অর্জনের লক্ষ্যে গাজীপুরবাসী তথা সমগ্র দেশবাসীর কাছে দোয়া সমর্থন ও এসএমএসের মাধ্যমে ভোট দিয়ে চ্যাম্পিয়ন করতে সহযোগিতা প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।
মারজিত রহমান মহারাজা’র মা মাফুজা বেগম সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় কালে তার বক্তব্যে তিনি বলেন মহারাজা গাজীপুরের সন্তান, বাল্যকাল থেকে আজ অব্দি অনেক কষ্ট করে ছেলে কে এই পর্যায় নিয়ে এসেছেন। চ্যানেল আই সেরা কন্ঠ ফাইনাল রাউন্ডে নিয়ে আসছেন তিনি স্কুলে শিক্ষকতা করেছেন টিউশনি করেছেন তার অর্জিত সকল অর্থ ছেলের পিছনে ব্যয় করেছেন সেই দুঃসময় একমাত্র সংগীত শিক্ষক জনাব মোঃ শাহ আলম সজল ব্যতীত তাদের পাশে কেউ সহযোগিতার হাত বাড়ায়নি। জীবনে অনেক দুঃখ কষ্ট সহ্য করেছেন তবু ছেলের স্বপ্ন পূরণে বিঘ্ন ঘটতে দেননি বরং তার সন্তান কে দেশর সেরা শিল্পী গড়ার জন্য এখনও যুদ্ধ করে যাচ্ছেন। চ্যানেল আই সেরা কন্ঠে তার পুত্র ফাইনাল রাউন্ডে উত্তীর্ণ হয়েছে, তিনি তার সন্তানের জন্য গাজীপুরবাসীর এবং দেশ বাসীর কাছে দোয়া ও সহযোগিতা প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।
মহারাজা’র সংগীত শিক্ষক জনাব মোঃ শাহ্ আলম সজল সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় কালে তাঁর বক্তব্যে তিনি বলেন মহারাজা যখন টঙ্গী মিউজিক স্কুলে ভর্তি হয়, তখন সে খুব চঞ্চল দুরন্ত দুষ্ট ছিল এতটাই দুর্দান্ত ছিল কোন ভাবেই তাকে থামানো যেত না। মহারাজা কে যখন হারমোনিয়াম শিখাতেন তখন হারমোনিয়ামের প্যাডেল হাতের নাগাল পেতনা ২০০৬ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ ৭ বছর দক্ষতার সাথে সংগীত শিক্ষা দিয়েছেন এবং তার বদৌলতে চ্যানেল আই ক্ষুদে গানরাজে চান্স পেয়ে সেরা ১২ তে উত্তীর্ণ হয়েছিল। ২০২৩ সালে চ্যানেল আই সেরা কন্ঠ অংশগ্রহণ করে ফাইনাল রাউন্ডে এসেছে তিনি গাজীপুর বাসী এবং দেশবাসীর কাছে দোয়া সমর্থন এবং এসএমএস এর মাধ্যমে ভোট দিয়ে মহারাজাকে চ্যাম্পিয়ন করতে সহযোগিতার আহ্বান জানান।
Leave a Reply